নিজস্ব প্রতিবেদক: হাটহাজারীতে ঝুঁকিপুর্নভাবে রেললাইনের উপর কোরবানির পশুর অবৈধ হাট বসছে দাপটের সাথেই। এছাড়াও সপ্তাহের প্রতি রবিবার ও বৃহস্পতিবার অবৈধভাবে রেলপথের উপর পশুরহাট বসলেও দেখার যেন কেউ নেই।
রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের আপত্তি সত্ত্বেও নিয়মিত বসছে পশুর হাটটি।আবার রেল লাইনের পশ্চিমে আলীপুর গ্রামে যাওয়ার রাস্তা। ওই গ্রামে স্কুল মাদ্রসা থাকায় এবং আলীপুর গ্রাম থেকে পৌরসদরে অবস্থিত বিভিন্ন স্কুল কলেজ মাদ্রাসায় বিশেষ করে কোমলমতি শিক্ষার্থীরা প্রতিদিন আসা যাওয়া করে। তবে তারা অভিভাবকদের সাথে যাওয়ার সময় হাটের দিন গরুর ভয়ে এদিকে ঐদিকে দৌঁড় দিতে দেখা যায়। অনেকে ভয়ে সাথে থাকা অবিভাবকদের জড়িয়ে ধরার দৃশ্যও হরহামেশা ঘটে। ফলে যেকোনো মুহূর্তে বড় ধরনের দুর্ঘটনার আশঙ্কা রয়েছে।
জানা গেছে, রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের আপত্তি উপেক্ষা করেই রেল লাইনের উপর পশুর হাট পরিচালনা করছেন বাজার ইজারাদারা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধীক বিক্রেতা বলেন, রেললাইনের পাশে গরু-ছাগল নিয়ে আসা ঝুঁকিপূর্ণ। যেহেতু বাজার ইজারা হচ্ছে এবং সরকারও বিপুল পরিমাণ রাজস্ব পাচ্ছে সেহেতু পশুর হাটের নির্দিষ্ট ও নিরাপদ জায়গা বের করা প্রয়োজন। এখানে পশুর হাটের মতো কোনো স্থান নেই। বাজার ইজারাদার কোনোকিছু তোয়াক্কা না করেই নিজের ইচ্ছেমতো পশুর হাট পরিচালনা করছেন এখানে।
রেললাইনে ঝুঁকিপূর্ণ গরুর হাট বাজার বসা ইজারাদারদের একজন আবদুল মাবুদ আইয়ুব দাপটের সাথে গণমাধ্যমকর্মীদের জানান, এখানে কোনো ইজারা হয়নি। প্রশাসনের পক্ষ থেকে আমাদের কয়েকজনকে হাট কালেকশনের দায়িত্ব দিয়েছেন। ঝুঁকিপুর্নভাবে রেল লাইনে হাট বসানো সম্পর্কে প্রশ্ন করতেই তিনি বলেন, ঝুঁকি টুকি বলে লাভ নাই, রেলওয়েও সরকার পৌরসভাও সরকার, এসব ওদের সাথে কথা বলেন,আমার সাথে কথা বলে লাভ নাই। তাছাড়া এই বাজারটি এভাবে ৫০ বছর ধরে চলছে। কোন ঝুঁকিটুকি নাই। এই বাজার থেকে প্রতিদিন লাইভ চলে আজকেও ২/৩ টা ফেসবুক লাইভ হবে, সব মানুষরা দেখছেনা, কই কোনো সমস্যা তো হয়নি। পরে আপনাদের দায়িত্ব কে দিছে এমন প্রশ্ন করা হলে উত্তরে তিনি বলেন গরুর বাজারে আসেন, দেখা করেন। ”
হাটহাজারী রেলওয়ে স্টেশন মাস্টার ফকরুল আলম জানান, রেললাইনে ঝুঁকিপূর্ণভাবে গরুর অবৈধ হাট বাজার বসানোর ব্যাপারে ব্যবস্থা নিতে উর্ধতন কর্মকর্তাকে জানিয়ে চিঠি দিয়েছি। এবং উর্ধতন কর্মকর্তাদের নির্দেশনা মোতাবেক উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সাথে যোগাযোগ করেছি।
হাটহাজারী পৌরসভার প্রশাসক আলহাজ্ব মনজুরুল আলম চৌধুরী গণমাধ্যমকর্মীদের বলেন, সরকারি নির্দেশনা দেয়া আছে কোন রাস্তাঘাট ও রেললাইনে গরুর হাট বাজার বসানো যাবে না। আগামীকাল আইন শৃঙ্খলা মিটিংয়ে এ বিষয়ে আলোচনা করা হবে। তবে রেললাইনে ঝুঁকিপূর্ণ গরুর হাট বাজার না বসিয়ে তাদের বালুরটাল নামক স্থানে কোরবানীর গরুর হাট বসাতে বলা হয়েছে।
হাটহাজারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এবিএম মশিউজ্জামান জানান, এখনো পর্যন্ত কোনো কোরবানীর পশুর হাট বাজার এর অনুমোদন দেয়া হয়নি।
বাংলাদেশ রেলওয়ে (চট্টগ্রাম) পূর্বাঞ্চলের প্রধান প্রকৌশলী আবু জাফর মিয়া শনিবার দুপুরে জানান, বিষয়টি আমার জানা ছিলোনা, আপনার মাধ্যমে জানলাম। আমি এখনই খবর নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিচ্ছি।
বাংলাদেশ রেলওয়ে চট্টগ্রাম এর বিভাগীয় ব্যবস্থাপক মো.আনিসুর রহমান শনিবার দুপুরের দিকে জানান, হাটহাজারী স্টেশন মাস্টার বিষয়টি আমাকে অবহিত করলে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করতে দুইজন প্রতিনিধি পাঠানো হয় এবং হাটহাজারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবরে একটি লিখিত অভিযোগ দিতে স্টেশন মাস্টারকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এ বিষযটি গুরুত্বসহকারে দেখা হচ্ছে বলেও জানান তিনি।